শ্যামনগরের ভিডিও নিয়ে উত্তেজনা নেট দুনিয়ায়
নিজস্ব প্রতিবেদন : ভিডিওকে কেন্দ্র করে দুদিন ধরে উত্তেজনা নেট দুনিয়ায়। জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের এক বাসিন্দা তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তকে ভিডিও বন্দী করে সোশ্যাল মাধ্যমে আপলোড করেন। ভিডিওটিতে সম্পূর্ণভাবে যৌনতা ও নগ্নতার চিত্র স্পষ্ট, এমনটাই দাবি করছেন নেটিজেনরা। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ভাইরাল ভিডিওটি সরাসরি কেউ শেয়ার না করলেও ভিডিওর পুরুষ ও মহিলা চরিত্রের ফটো সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে থাকে অগণিত মানুষ।
অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভাইরাল ভিডিও নেটপাড়ায় ব্যাপক ঝড় তুলেছে। গ্রুপ হোক বা মেজেঞ্জার শ্যামনগর নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনেদের ক্ষেত্রে রাতারাতি আলোচনার শীর্ষে শ্যামনগর। ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে শেয়ার হচ্ছে শ্যামনগর নিয়ে নানা পোস্ট।
যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া কম ঘাঁটেন বা ধারণা কম, তাঁদের কৌতুহল বেড়েই চলেছে। ট্রেনে, বাসে সর্বত্র এই নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। বাদ নেই পাড়ার রক থেকে শুরু করে চায়ের দোকান। ভাইরাল হওয়া ছবি দেখে নেটপাড়ার নাগরকিদের মন্তব্য, 'শালি মানেই আধি ঘরওয়ালি'।
এই ঘটনার কারণেই বিশেষ বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার শ্যামনগরের বাসিন্দাদের। শ্যামনগরবাসীদের মতে, এভাবে সোশ্যাল মাধ্যমে তাঁদের এলাকার নাম বদনাম করার কোনও যুক্তি হয় না।
অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভাইরাল ভিডিয়ো দেখার জন্য অনেকে বিশেষ আগ্রহী। মেসেঞ্জারে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চলছে ভিডিওর লিংক আদান-প্রদান। ভিডিওকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মিম শেয়ার করছেন কিছু মানুষ। যাঁদের কাছে এই ভিডিয়ো রয়েছে, তাঁরা আবার নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ার সেরা, এমনটাই ভাবতে শুরু করেছেন নিজেদের।
আমরা কথা বলেছিলাম (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) শ্যামনগরের বেশ কিছু প্রবীণ বাসিন্দাদের সাথে, তাঁদের মতে, "এই ভিডিও কান্ডের জেরে স্বাভাবিক ভাবেই নিজের জায়গার সম্মানহানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। তারা জানান, এটাই সেই শ্যামনগর- এখানেই বিখ্যাত হয়েছেন বিশ্বকোষের উদ্ভাবক তৈলক্যনাথ ও রঙ্গলাল মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ব্যক্তিত্ব পদ্মশ্রী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, প্রাক্তন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী স্বর্গীয় বিদ্যুৎ গাঙ্গুলী কিংবা ডক্টর প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতন বিশেষ ব্যক্তিত্ব। এই শ্যামনগর ঐতিহ্যবাহী, এখানেই অবস্থিত ঐতিহাসিক মূলাজোর ব্রহ্মময়ী কালীবাড়ি, ভরতচন্দ্র গ্রন্থাগার। অতএব, এই সব অপপ্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে শ্যামনগরবাসীদের। শ্যামনগর নামটাকে কালিমালিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে সকলকে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।
তবে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও এভাবে নেট-দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া নীতিগতভাবে কতটা সঠিক, এই ধরনের সাইবার অপরাধ দমনে প্রশাসন কতটা কার্যকরী সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Comments
Post a Comment