জানেন কি নীল ষষ্ঠী পুজো কি এবং কেন করা হয়
গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে রয়েছে নানা পুজো ও অনুষ্ঠান। আজকে নীল পুজো বা নীল ষষ্ঠী। বাঙালি মায়েদের কাছে এই দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় প্রতিটি বাঙালি বাড়ির মহিলারাই সন্তানদের মঙ্গল কামনায় শিবের কাছে ব্রত রাখেন ও পুজো করেন ভক্তি ভরে। তবে এই পুজো মূলত মায়েদেরকেই করতে দেখা যায়। কিন্তু কেন শুধু মায়েরাই করেন এই পুজো? এই পুজোর ইতিহাস অনেকেরই অজানা।
দেবাদিদেব শিবের অপর নাম হলো নীলকণ্ঠ। সমুদ্র মন্থনের সময় বিষ উঠে আসলে পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে সেই বিষ নিজের কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব। সেই থেকে তার কণ্ঠ নীল হয়ে যাওয়ায় তাকে অনেকেই নীল বা নীলকণ্ঠ নামেও আখ্যায়িত করেন।
এদিকে লোকমুখে প্রচারিত যে শিবের সঙ্গে নীলচণ্ডিকা বা নীলাবতী পরমেশ্বরীর বিয়ের অনুষ্ঠানকেই নীল ষষ্ঠী বলা হয়ে থাকে। দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর সতী পুনরায় নীলধ্বজ রাজার বিল্ববনে দেখা দিয়েছিলেন। সেই থেকে রাজা তাঁকে নিজের মেয়ের মতো করে রেখেছিলেন ও লালন পালন করেন। শিবের সঙ্গে ফের বিয়ে হয়ে তার। কিন্তু শেষমেশ বাসর ঘরে “মক্ষিপা” বেশে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মেয়েকে হারানোর শোকে রাজা-রাণীও নিজেরা মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাই অনেকেই বলেন যে শিব ও নীলাবতীর বিয়ের স্মারক হল এই ‘নীল পুজো’৷
আরও একটি লোক কথা না বললেই নয়। এক বামুন আর বামুনী পুজো করলেও যতবার সন্তান হতো সে বেশিদিন বাঁচতো না। এই নিয়ে একদিন মনের কষ্টে কাশীর গঙ্গা ঘাটের ওপর বসে দুজনে কাঁদছিলেন। সেই সময়ে বামনীর বেশ ধরে উদয় হন মা ষষ্ঠী বুড়ি।
তিনি তাদের কষ্ট শুনে তাদেরকে নীল ষষ্ঠী পালনের পরামর্শ ও নিয়ম বাতলে দেন। সংক্রান্তির আগের দিন উপোষ করে সন্ধে নাগাদ নীলাবতীর পুজো করে নীলকণ্ঠ শিবের ঘরে বাতি জ্বেলে মা ষষ্ঠীকে প্রণাম করে তবে জল পানের আদেশ দেন তিনি। এই পুজো করে নাকি সেই দম্পতি ভালো ফল পেয়েছিল। সেই থেকেই গ্রাম বাংলায় এই পুজোর চল নাকি শুরু হয়।
তথ্য ও চিত্র : সংগৃহীত
Comments
Post a Comment